বদর যুদ্ধের কাহিনী - Islamic History Bangla Site pdf

 বদর যুদ্ধের ইতিহাস

বদরের যুদ্ধ জয়,বদরের কাহিনী,৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে কিভাবে বদরের যুদ্ধ জয় করেন মুসলমানরা,৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে বদরের যুদ্ধ জয় করার করুন কাহিনি,৩১৩জন সাহাবী নিয়ে বদরের যুদ্ধ জয় মিজানুর রহমান আজহারি,313 jon sahabi niye bodorer juddo joy,Mizanur Rahman Azhari,allama dr Mizanur Rahman al Azhari Bangladesh,allama Mizanur Rahman azhari,Azhari Bangladesh,mizanur rahman azhari vs siddiki Kuakata,mizanur rahman azhari fan reaction,mizanur rahman azhari top waz,mizanur rahman azhari,islamic photo,islam,ছনি,ফটো,পিকচার,ইসলামিক পিকচার,

বদর যুদ্ধের ঘটনা

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণে বদর নামক স্থানে অবিশ্বাসী কুরাইশ বাহিনীর সঙ্গে ইসলামের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। 

আরও পড়ুন: নেক আমল কাকে বলে 


ইসলামের প্রথম সমর অভিযান

‘বদর যুদ্ধ’। এ যুদ্ধ জয়ের ফলে ইসলাম ও মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। মদিনার শক্তি ও ভিত্তির স্বীকৃতি অর্জিত হয়। 

আরও পড়ুন: উহুদের যুদ্ধের কাহিনী


মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পুরোনো রাস্তায় গেলে বদরের প্রান্তর পড়ে। নতুন রাস্তা হওয়ায় অনেক কম দূরত্বে, কম সময়ে মদিনায় পৌঁছানো যায়। চাইলেও হজ্জযাত্রীরা বদরের প্রান্তরে যেতে পারেন না।


বেশ কয়েকবার হজ করার সুবাদে মক্কায় বসবাসরত প্রবাসীদের সঙ্গে রওনা দিলাম বদরের প্রান্তরের উদ্দেশে।

সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন তৎকালীন হজ কনসাল জাফর উল্লাহ খান, অনুবাদক মুসা হেলালী। 

আরও পড়ুন: হযরত আয়শা (রাঃ) জীবনী


মক্কার উম্মুল কোরআ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বাংলাদেশি ছাত্র—মুতাসিম বিল্লাহ, ছফি উল্লাহ, আবদুল বারী ও শোয়াইব রশীদ। চলার পথে আবদুল বারী জানান, ইসলামের ইতিহাসে বদরের যুদ্ধ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটাই মুসলমান আর কাফিরদের মধ্যে প্রথম সংঘর্ষ।


মনে মনে গর্ব বোধ করছিলাম এই ভেবে যে ইসলামের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় যাচ্ছি। বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে গাড়িতে বসে আমরা নিজেদের মধ্যে অনেক আলাপ করছিলাম।


মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার রাস্তা পুরোটাই মরুভূমি; বালু আর বালু। নির্জন। হঠাৎ দু-একটা গাড়ি সাঁই সাঁই করে চলে যায়। আশপাশে কোনো জনবসতি নেই।


মদিনার রাস্তায় একটা জিনিস ভালো লাগে—জনমানবশূন্য হলেও কয়েক মাইল পরপর পেট্রলপাম্প, আর পাম্পের সঙ্গে লাগোয়া ডিপার্টমেন্ট স্টোর। 


প্রতিটি পাম্পে বাথরুম ও নামাজের ব্যবস্থা আছে। আরেকটি জিনিস লক্ষ করলাম, কয়েক মাইল পরপর একটা করে মসজিদ। মসজিদগুলো ছোট। কোথাও কোথাও আবার বড় মসজিদও রয়েছে।


চলার পথে এশার নামাজ পড়ার জন্য নামলাম। হজের পর কিছুটা শীত শীত লাগছিল। নিজেরা জামাত করে নামাজ পড়লাম। আবার যাত্রা শুরু হলো, গন্তব্য বদরের প্রান্তর।


সৌদি আরবের পুলিশ

পথে সৌদি পুলিশ আমাদের গাড়ি থামাল। জানতে চাইল কোথায় যাচ্ছি, গাড়িতে কারা ইত্যাদি। সৌদি আরবে বসবাস করার বৈধ পরিচয়পত্রকে আরবিতে ‘ইকামা’ বলে।


ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত

ইকামা যাঁরা দিতে পারেন, তাঁদের কফিল বলে। অর্থাৎ ইকামাধারীর কোথাও চলাচল করতে কফিলের অনুমতি লাগে। আমরা হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। হজ শেষে বদরের প্রান্তর দেখতে যাচ্ছি ইত্যাদি বোঝালেন অনুবাদক মুসা হেলালী। সৌদি পুলিশের অনুমতি মিলল সামনে যাওয়ার।


 মক্কা থেকে মদিনার পথ অনেক দীর্ঘ। প্রায় ছয় থেকে সাত ঘণ্টা লাগে (যদিও জিএমসি গাড়িতে সাড়ে তিন ঘণ্টায় মদিনায় যাওয়া যায়)। দ্রুতগতিতে চালালে হাজিদের ঝাঁকি বা কষ্ট হতে পারে—এ জন্য গাড়ি দ্রুত চালানো যায় না।


দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে থাকার পর আমরা পথে কয়েক জায়গায় যাত্রাবিরতি করলাম। ফজরের আজানের সময় আমরা বদর এলাকায় এসে পৌঁছালাম।


তখনো অন্ধকার। অনেকগুলো পুরোনো বাড়ি। কোনোটির দরজা আছে, ছাদ নেই। আবার কোনোটির ছাদ আছে তো দরজা নেই। মনে মনে ভাবলাম এটাই কি বদরের প্রান্তর? এরপর চোখে পড়ল বড় একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যাতে শহীদদের নাম লেখা আছে।


পাশেই রাস্তা। রাস্তার পাশে দেয়ালঘেরা ঐতিহাসিক বদরের প্রান্তর। মক্কার উম্মুল কোরআ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মুতাসিম বিল্লাহ জানালেন, এটা সেই জায়গা—মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর উপত্যকা। 


মুসলিম বাহিনীর

মুসলিম বাহিনীর সঙ্গে কুরাইশদের সংঘর্ষ হয়। হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্বয়ং যুদ্ধ পরিচালনা করেন। আল আরিমা পাহাড়ের পাদদেশে মুসলিম বাহিনীর শিবির স্থাপন করা হয়েছিল।


ফলে পানির কূপগুলো তাদের আয়ত্তে ছিল। আর নবী করিম (সা.) সৈন্য সমাবেশের জন্য এমন একটি জায়গাই বেছে নেন, যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ হলে কোনো মুসলমান সৈন্যের চোখে সূর্যের কিরণ পড়বে না। প্রাচীন আরবের রেওয়াজ অনুযায়ী প্রথমে মল্লযুদ্ধ হয়। 

মহানবী (সা.) এর নির্দেশ

মহানবী (সা.) এর নির্দেশে আমির হামজা, আলী, আবু উবায়দা মল্লযুদ্ধে অংশ নেন। মাত্র ৩১৩ জন মুসলমান অসামান্য রণ-নৈপুণ্য ও নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে যুদ্ধ করে বদরের যুদ্ধে বিজয় লাভ করেন।


এ যুদ্ধে মাত্র ১৪ জন মুসলিম সৈন্য শাহাদাত বরণ করেন। কুরাইশ-বীর আবু জাহেল এই যুদ্ধে নিহত হন। এসব বর্ণনা শুনে আর বাস্তবে বদরের প্রান্তর দেখে আমরা হারিয়ে যাই সেই সময়ে। 


যদিও বদরের যুদ্ধের বছর অর্থাৎ ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মুসলিম ও কুরাইশ বাহিনীর মধ্যে বহু খণ্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয়; তথাপিও বদরের যুদ্ধ ইসলাম, মুসলমান এবং মদিনার ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে। 


 বদরের যুদ্ধের কিছু তথ্য— 


মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা: ৩১৩ জন। মুহাজির ছিলেন ৮২ জন। আর সবাই আনসার। আওস গোত্রের ৬১ জন এবং খাজরাজ গোত্রের ১৭০ জন।


সেনাপতি: হজরত মুহাম্মদ (সা.)। মুসলিমদের উট ও ঘোড়ার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে: ৭০টি ও ২টি। মুসলিম বাহিনীর শহীদ হন: ১৪ জন। বদরের যুদ্ধে আবু জাহেলকে হত্যা করেন ২ ভাই : হজরত মুআজ (রা.) ও হজরত মুআওয়েজ (রা.)। 


কুরাইশ বাহিনী:

অমুসলিম সৈন্য সংখ্যা ১০০০ জন। কুরাইশ বাহিনীর ছিল অসংখ্য উট। ১০০টি ঘোড়া এবং ৬০০ লৌহবর্ম। 


অমুসলিম সেনাপতি: ওতবা বিন রবিআ। অমুসলিম নিহত ৭০ জন এবং বন্দীও হয় ৭০ জন। বদরের যুদ্ধে কুরাইশদের প্রায় গোত্র অংশগ্রহণ করলেও বনু আদি গোত্রের কেউ এই যুদ্ধে অংশ নেননি। 


যুদ্ধের ফলাফল:

ইসলামের এ প্রথম সামরিক যুদ্ধে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী বিজয় লাভ করে। 


বদরের যুদ্ধের প্রভাব: ইসলামের ইতিহাসে বদরের যুদ্ধ সুদূরপ্রসারী প্রভাব সৃষ্টি করে। ফলে মদিনাকে অন্য আরব গোত্রগুলো মুসলিমদের নতুন শক্তি হিসেবে দেখতে শুরু করে।


বদরের যুদ্ধের পর মদিনার শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করে। মুসলিম উম্মাহর কাছে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাগণ অনেক সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী।


বদরের যুদ্ধের পর আবু সুফিয়ান শপথ নিয়েছিলেনঃ


যে বদরের বদলা নেয়ার আগ পর্যন্ত তিনি গোসল করবেন না। এ উদ্দেশ্যে তিনি দুইশত অশ্বারোহী নিয়ে মদিনা থেকে ১২ মাইল দূরে কানাত উপত্যকার শেষে অবস্থিত সাইব পর্বতের প্রান্তে তাবু স্থাপন করেন। সরাসরি আক্রমণ না করে তিনি ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন।


তিনি রাতের বেলা গোপনে বনু নাদির গোত্রের বসতিতে উপস্থিত হন। কিন্তু ফলাফল খারাপ হতে পারে ভেবে গোত্রের প্রধান হুয়াই ইবনে আখতাব আবু সুফিয়ানকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি। এরপর আবু সুফিয়ান বনু নাদিরের আরেক নেতা ও গোত্রের কোষাধ্যক্ষ সাল্লাম ইবনে মিশকামের সাথে সাক্ষাত করেন।


আবু সুফিয়ান এসময় সাল্লাম ইবনে মিশকামের আতিথেয়তা গ্রহণ করেছিলেন। সাল্লাম তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং মদিনার সম্পর্কে গোপন তথ্য দেন। রাতে আবু সুফিয়ান ফিরে এসে তার দলের সাথে মিলিত হন। 


খেজুর গাছ

মদিনার পাশে উরাইদ নামক স্থানে হামলার জন্য তিনি তার বাহিনীর লোকদেরকে প্রেরণ করেন। এসময় বাহিনীটি এখানকার খেজুর গাছ কেটে ফেলে এবং আগুন লাগিয়ে দেয়। আক্রমণকালে এখানে থাকা দুই মুসলিমকে হত্যা করা হয়। এরপর তারা মক্কা পালিয়ে যায়। 


খবর পাওয়ার পর মুহাম্মাদ মদিনা পরিচালনার দায়িত্ব আবু লুবাবা ইবনে আবদুল মুনজিরকে প্রদান করেন এবং মুসলিমদের একটি বাহিনী নিয়ে কুরাইশদের পিছু নেন। 


তবে কুরাইশরা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আক্রমণ করা সম্ভব হয়নি। মুসলিমরা কারকারাতুল কুদর পর্যন্ত কুরাইশদের পশ্চাদ্ধাবন করেছিল। পালিয়ে যাওয়ার সময় কুরাইশ দলটি বোঝা কমানোর জন্য তাদের কিছু ছাতু ও মালপত্র ফেলে যায়। এগুলি মুসলিমদের হস্তগত হয়। 

আরও পড়ুন: সুহবাতের উদাহরণ


ভূমিকা : লিখতে গিয়ে যদি ভূল হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং কোন সাজেশন এর প্রয়োজন হলে আমাকে ইমেইল এর মধ্যেমে জানিয়ে দিবেন!

প্রতিদিন এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন ।


ভালো লাগলে শেয়ার করবেন,

সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।

Please Do,not Share Any Spam Links

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post