সহীহ ঈমানের কষ্টিপাথর - islamic history - islamic life

সহীহ ঈমানের কষ্টিপাথর

সহীহ ঈমানের কষ্টিপাথর - islamic history bangla- islamic life

আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন -

 اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَاِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ ؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ * لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ * وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ٭ غُفْرَانَکَ رَبَّنَا وَ اِلَیْکَ الْمَصِیْرُ 

 তরজমাঃ রাসূল ঈমান আনয়ন করেছেন ঐ সকল বস্তু সম্পর্কে যা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও।


সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি

তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর নবীগণের প্রতি, তারা বলে, আমরা তাঁর নবীগণের মাঝে কোন পার্থক্য করি না এবং তারা আরো বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। 


 আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই, ওহে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সকলেই আপনারা দিকে প্রত্যাবর্তন করি। [সূত্র : সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৫।]

وَمَنْ یَّكْفُرْ بِاللهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیْدًا 

যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের ওপর এবং তাঁর রাসূলগণের ওপর ও কিয়ামত দিবসের ওপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে”।


 [সূত্র: সূরা নিসা, আয়াত ১৩৬। হাদীসে জিবরাঈলে উল্লেখ আছে, হযরত জিবরাঈল আ. আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ছদ্মবেশে এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঈমান কাকে বলে? জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ

 اَنْ تُؤْ مِنَ بِاللهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ وَالْيَوْمِ الْاَخِرِ وَتُؤْمِنُ بِا لْقَدْرِ خَيْرِ هٖ وَ شَرِّ هٖ


 ঈমানের হাকীকত হলো

তুমি মনে-প্রাণে বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তা‘আলার ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের ওপর, আসমানী কিতাবসমূহের ওপর, আল্লাহ তা‘আলার নবী-রাসূলগণের উপর, কিয়ামত দিবসের ওপর এবং তাকদীরের ভালো-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়ার ওপর।


 [সূত্র: বুখারী খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১২ ও মুসলিম। মিশকাত শরীফ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১১] উল্লেখিত আয়াত ও অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এ হাদীসটি ‘ঈমানে মুফাসসাল’-এর ভিত্তি। ঈমানে মুফাসসালের মাধ্যমে এ কথাগুলোরই স্বীকৃতি জানানো হয় এবং মনে-প্রাণে বদ্ধমূল বিশ্বাসের ঘোষণা করা হয় যে,

 اَ مَنْتُ بِا للهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ والْيَوْمِ الْاَخِرِ وَالقَدْرِ خَيْرِ هٖ وَ شَرِّ هٖ مِنَ ا للهِ تَعٰالٰی والْبَعْثِ بَعْدَا لْمَوْتِ


 আমি ঈমান আনলাম বা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করলাম-১. আল্লাহ তা‘আলাকে, ২. তাঁর ফেরেশতাগণকে,

 ৩। তাঁর প্রেরিত সকল আসমানী কিতাবকে, ৪. তাঁর প্রেরিত সকল নবী-রাসূলকে, ৫. কিয়ামত দিবসকে অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বজগত একদিন শেষ হবে, তাও বিশ্বাস করি,


 ৬। তাকদীরকে বিশ্বাস করি অর্থাৎ জগতে ভালো-মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট, তাঁরই পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন পুনর্বার জীবিত হতে হবে, তাও অটলভাবে বিশ্বাস করি।


 উল্লেখিত ৭টি বিষয়ের মধ্যে ৭নং বিষয় ৫নং বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রশাখা। তবে তার বিশেষ গুরুত্বের কারণে তাকে ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো ঈমানের আরকান বা মূলভিত্তি । ঈমানের এ বিষয়গুলো ব্যাখ্যা সহকারে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা জরুরী।


ঈমানের এ সকল বুনিয়াদী বিষয়গুলো সামনে ব্যাখ্যা সহকারে পেশ করা হবে। ঈমানের সংজ্ঞাঃ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যত বিধান-আহকাম হাসিল করেছেন এবং অকাট্য দলীল দ্বারা তা প্রমাণিত হয়েছে তার কোন একটি বাদ না দিয়ে সব গুলোকে মনে প্রাণে বদ্ধমূল ভাবে বিশ্বাস করা।


আল্লাহ তা‘আলার আদেশ-নিষেধ

 সঠিকভাবে এবং পূর্ণভাবে আমল করার মাধ্যমে এ ঈমান কামিল বা শক্তিশালী হয়। আর আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালনে ত্রুটি করলে ঈমান নাকেস বা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঈমানের নূর-নষ্ট হয়ে যায়।


এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এবং তাওবা না করলে আল্লাহ না করুন ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কুফর এর সংজ্ঞাঃ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যত বিধান-আহকাম হাসিল করেছেন এবং অকাট্য দলীল দ্বারা তা প্রমাণিত হয়েছে তার কোন বিষয় সম্বন্ধে অন্তরে সন্দেহ পোষণ করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ঠাট্টা মজা করা।


উল্লেখিত কাজের দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে গেলে তার পেছনের জীবনের সকল ইবাদত-বন্দেগী ও আমল নষ্ট হয়ে যায়। এবং বিবাহিত হলে তার বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। আল্লাহ না করুন এ অবস্থা কারো হলে তার জন্য জরুরী হল, নতুনভাবে কালেমা পড়ে তওবা ইস্তিগফার করে ঈমান দোহরায়ে নিয়ে বিবাহ দোহরায়ে নেয়া।


 কুফর এর প্রকারভেদ: যদিও কুফরের বিভিন্ন প্রকার আছে তবে এর প্রত্যেকটি দ্বারা মানুষ ঈমান হারা হয়ে কাফির ও বেঈমান হয়ে যায়। সুতরাং এ সবগুলো থেকে বেঁচে থাকা ফরজ।


 ১। কুফরে ইনকারঃ অন্তর এবং যবান উভয়ের মাধ্যমে দ্বীনি বিষয় বা বিষয়সমূহ অস্বীকার করা। যেমন: মক্কার কাফিরগণ। ২। কুফরে জুহুদঃ অন্তরে বিশ্বাস রাখা কিন্তু মুখে অস্বীকার করা। যেমন: মদীনার ইয়াহুদগণ।


 ৩। কুফরে ‘ইনাদঃ অন্তরে দ্বীনকে বিশ্বাস করে এবং মুখেও স্বীকার করে। কিন্তু ইসলামের হুকুম আহকাম কে মান্য করে না। অন্যান্য দ্বীন বাতিল হয়ে গিয়েছে তা বিশ্বাস করে না। যেমন: আদমশুমারীর অনেক নামধারী মুসলমান যারা কখনো সহীহ দ্বীনী পরিবেশে আসে না।


 উল্লেখ্য, উল্লেখিত ৩টির যে কোন একটি পাওয়া গেলে তার ঈমান চলে যাবে। 


৪। কুফরে যানদাহকাহঃ বাহ্যিকভাবে দ্বীনের সব কিছু স্বীকার করে কোন বিষয়ে অস্বীকার করে না কিন্তু দ্বীনের কোন বিষয়ে এমন ব্যাখ্যা প্রদান করে যা উম্মতের ইজমা পরিপন্থী।


যেমন: কাদিয়ানীগণ খতমে নবুওয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে তাদের ভণ্ড নবী কে প্রমাণ করে। তেমনিভাবে কেউ দ্বীনের অর্থ করে হুকুমতে ইসলামী। এখান থেকে ঈমান মুফাসসালে বর্ণিত বিষয়গুলো ব্যাখ্যা সহকারে পেশ করা হচ্ছে।

 ♥ ভূমিকা

 লিখতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের ভুল হয়ে থাকে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,এবং কোন সাজেশন এর প্রয়োজন হলে আমাদেরকে ইমেইল এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন।

 আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

Please Do,not Share Any Spam Links

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post