হযরত ওমর (রাঃ) জীবন কাহিনী - হযরত ওমর (রাঃ) জীবনের গল্প - Hazrat Omor R. Jiboni

 হযরত ওমর (রাঃ) জীবনী

Hazrat Omor R. Jiboni,hazrat omorar jibon kahini,Islamic image,islamic picture,

ওমর খাত্তাব (রাঃ) জীবনী

ওমর ইবনুল খাত্তাব (আরবি, عمر بن الخطاب) (৫৮০ – নভেম্বর ৩, ৬৪৪) যিনি সচরাচর হযরত উমর নামে অভিহিত ।


Read more:

হযরত খাদিজা (রা:) এর জীবনী

ইসলাম ধর্মের মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ঘনিষ্ঠ সাহাবী।


তিনি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 


কুরাইশ গোত্রের বনু আদি সম্প্রদায়ে তাঁর জন্ম। তিনি উমর আল ফারুক নামেও পরিচিত।


'ফারুক' অর্থ সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।


তিনি খুলাফায়ে রাশেদীন এর দ্বিতীয় খলিফা হলেও শিয়া সম্প্রদায় তাঁকে ইসলামের খলিফা হিসেবে প্রাপ্য মর্যাদা প্রদান করে না।


প্রাথমিক জীবন


উমর বর্তমান সৌদী আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম খাত্তাব ইবনে নুফাইল।


তাদের পরিবার মূলত মধ্যবর্তী ধরনের ছিল। তিনি শিক্ষিত ছিলেন যা তখনকার আরব সমাজে অনেকটাই ব্যতিক্রম ছিল এবং শিক্ষিতদের অন্যরকম সম্মান ছিল। 


সুস্বাস্থ্য, শক্তিশালী, সাহসী এবং বিশেষ করে রাগী পুরুষ হিসেবেও তিনি সুপরিচিত ছিলেন।


যৌবনকালে একজন প্রথম শ্রেণীর কুস্তীগীর হিসেবে প্রখ্যাত ছিলেন। 


তখনকার আমলে মদ পান আরবে খুবই সাধারণ বিষয় ছিল এবং অনেকের বর্ণনামতে উমর ইসলাম গ্রহণের পূর্বে মদ পান করতেন।


কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর তিনি কখনও মদ্য স্পর্শ করেননি।


হযরত মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়কাল এ প্রাথমিক ইসলাম শত্রুতা


হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন প্রথম ইসলামের বাণী প্রচার করেন তখন উমর তাঁর তীব্র বিরোধিতা করেন এবং কুরাইশদের প্রথাগত ধর্ম রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।


ইসলাম বিরোধী হিসেবে তিনি সুপরিচিত ছিলেন।


আরবের প্রথাগত বহুঈশ্বরবাদী ধর্ম রক্ষার খাতিরে ইসলাম গ্রহণকারী আরব

এবং হযরত মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরোধিতায় অনড় এবং নিষ্ঠুর ভুমিকা নিয়েছিলেন। 


উমর এর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল এই নূতন ধর্ম ইসলাম কুইরাইসদের মাঝে বিবাদ এবং বিভাদ সৃষ্টি করবে।


কুরাইশদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসারিদের বললেন আবিসিনিয়া য় হিজরত করতে। 


ছোট একটা দলের এই আবিসিনিয়ার হিজরতের ঘটনা উমর কে কুরাইশ বংশের ভবিষ্যৎ একতা সম্পর্কে ভীতি এবং দুশ্চিন্তায় ফেলে দিল।


যার ফলশ্রুতিতে উমর, হযরত মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে হত্যার পরিকল্পনা করলেন।


ইসলাম ধর্ম গ্রহণ


ইবনে ইসহাকের সীরাত গ্রন্থ অনুসারে উমর 

"মুহাম্মদকে" (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং একদিন সে উদ্দেশ্যেই মুক্ত তরবারী হাতে ঘর থেকে বের হন।


পথিমধ্যে তিনি একজনের সাক্ষাৎ লাভ করেন যিনি ইতোমধ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।


সেই ব্যক্তি তাঁকে নবীকে হত্যার পূর্বে প্রথমে নিজের ঘর সামলানোর জন্য বলেন।


তাঁর কাছে উমর জানতে পারেন তাঁর বোন ফাতিমা এবং ভগ্নীপতি ইসলাম গ্রহণ করেছে। 


অগত্যা তিনি বোনের বাড়িতে যান এবং বোন ও ভগ্নীপতিকে কুরআন এর আয়াত আবৃতিরত অবস্থায় আবিষ্কার করেন।


ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ভগ্নীপতিকে মারধর করেন ; ফাতিমা তাঁর স্বামীকে রক্ষা করতে এলে তাকেও আঘাতের শিকার হতে হয়। 


প্রচণ্ডভাবে আহত হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কেউই ইসলাম ত্যাগ করতে সম্মত হন নি।


বোনের শরীরে রক্ত দেখে তিনি শান্ত হন এবং তাঁরা যা পাঠ করছিলো তা দেখতে চান।


পবিত্র হয়ে কুরআনের একটি আয়াত তিনি পাঠ করেন, আয়াতটি ছিল সূরা ত্বা-হা'র অংশ।


সেই আয়াতটি তাঁকে এতই অভিভূত করে যে তিনি সেদিনই মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে যেয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। 


ইসলাম গ্রহণের পর ইসলাম প্রসারে তিনি ততটাই ভূমিকা রেখেছিলেন, গ্রহণের পূর্বে ইসলামের বিরুদ্ধে যতটা ভূমিকা রাখতেন।

কুরআনের অর্থ।


মদীনায় হিজরত


আল্লাহর নির্দেশে রাসূল (সাঃ) সাহাবীদেরকে মদীনায় হিজরত করতে নির্দেশ দেয়ার পর, ওমর (রাঃ) বেশ কয়েকজন সাহাবীকে সাথে নিয়ে প্রকাশ্যে হিজরত করেন| 


স্ত্রীকে - বিধবা

তিনি তখন জনসম্মুখে বলেছিলেন, কেউ যদি তার মাকে সন্তানহারা এবং স্ত্রীকে বিধবা করতে চায়, সে যেন আমাকে বাধা দিতে এগিয়ে আসে| 


তার প্রবল সাহকিকতা ও বীরত্বের কারণে কুরাইশদের কেউ তাকে বাধা দিতে সাহস পায় নি ।


মদীনায় উমরের জীবন


মদীনায় ওমর (রাঃ) নবীজী (সাঃ)এর পাশে থেকে হিজরতকারী মুসলিমদের একজন সহচর ও প্রতিনিধি মুসলিম নেতার ন্যায় ভূমিকা রাখেন ।


মদীনায় হিজরতের পর সংঘটিত বদরের যুদ্ধ, উহুদের যুদ্ধ এবং খন্দকের যুদ্ধে তিনি প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।


হুদায়বিয়ার সন্ধি

হুদায়বিয়ার সন্ধির একজন অন্যতম সদস্য ও স্বাক্ষী ছিলেন তিনি| এছাড়া মক্কা বিজয়, হুনাইনের যুদ্ধ, খাইবারের অভিযান, তাবুকের যুদ্ধ এবং বিদায় হজ্জেও তিনি অংশগ্রহণ করেন ।


মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মৃত্যু


নবীজী(সাঃ) এর মৃত্যুর পর ওমর(রাঃ) নবীজী(সাঃ) কে অত্যধিক ভালোবাসার কারণে তা সহজে বিশ্বাস করতে পারেন নি। 


এবং এ খবর যারা প্রচার করবে তাদেরকে হত্যা করবেন বলে লোকজনের কাছে ঘোষণা করতে থাকেন ।


কিন্তু অনতিবিলম্বকাল পরে আবু বকর(রাঃ) এসে তাকে থামিয়ে সকলের কাছে নবীজী(সাঃ) এর মৃত্যূসংবাদ ঘোষণা করেন ।


আবূ বকর(রাঃ) নিজের বেদনাকে সংযত করে দৃঢ় কন্ঠে বলেন,যারা মুহাম্মাদ(সাঃ) এর উপাসনা করো তারা জেনে রাখ তিনি মারা গেছেন । 


এবং যারা আল্লাহর উপাসনা কর তারা জেনে রাখ, আল্লাহ অমর-অবিনশ্বর ।


এবং এরপর সূরা আলে ইমরান থেকে এ সম্পর্কিত একটি আয়াত পাঠ করেন ।


আবু বকর(রাঃ) এর এই দৃঢ় বক্তব্য শুনে ওমর (রাঃ) সম্বিত ফিরে পান এবং নবীজী (সাঃ) এর ইন্তেকালের সত্যতা বুঝতে পেরে অবনর্নীয় যাতনায় অঝরে অশ্রু বিসর্জন করেন ।

Read more:

সহীহ ঈমানের কষ্টিপাথর

আল্লাহ তা‘আলার ওপর ঈমান

অগোছালো অবস্থায় আমল শুরু


ভূমিকা : লিখতে গিয়ে যদি ভূল হয়ে থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

এবং কোন সাজেশন এর প্রয়োজন হলে আমাকে ইমেইল এর মধ্যেমে জানিয়ে দিবেন !

দয়াকরে শেয়ার করবেন, অন্যকে জানার সুযোগ করে দিবেন ।

সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।

Please Do,not Share Any Spam Links

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post